আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সাইবার হামলার শিকার হয়েছে ইউরোপের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরে সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান (থার্ড পার্টি সিস্টেম প্রোভাইডার) কলিনস অ্যারোস্পেস। ফলে ব্রাসেলস, বার্লিন, লন্ডনের হিথ্রোসহ বিভিন্ন বিমানবন্দরের কার্যক্রম সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, এমইউএসই সফটওয়্যারে হামলা হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে কলিনস। সফটওয়্যারটি যাত্রীদের চেক-ইন ও বোর্ডিংয়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। বিশ্বের বেশ কয়েকটি বিমান পরিবহন সংস্থা (এয়ারলাইন্স) এবং বিমানবন্দরে পরিষেবা প্রদান করে কলিনস অ্যারোস্পেস।
ইউরোপভিত্তিক বেশিরভাগ বিমান পরিবহন সংস্থা কলিন্স অ্যারোস্পেসের পরিষেবার গ্রাহক। সাইবার হামলার ফলে বিমানের চেক-ইন ও বোর্ডিং পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে একাধিক এয়ারলাইন্স তাদের ফ্লাইট বিলম্ব এবং অনেক ক্ষেত্রে বাতিলে বাধ্য হয়েছে। এক বিবৃতিতে কলিনস কর্তৃপক্ষ জানায়, এখন পর্যন্ত হামলার প্রভাব সীমিত। ম্যানুয়াল কার্যক্রমের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা দ্রুতসম্ভব স্বাভাবিক সেবা পুনরুদ্ধারে কাজ করছি। হিথ্রো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বিলম্বের বিষয়ে সতর্ক করে এক বিবৃতিতে বলেছে, মার্কিন প্রতিষ্ঠান কলিনস অ্যারোস্পেসের প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে কারিগরি কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। যাত্রীদের ভ্রমণের আগে এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফ্লাইটের সর্বশেষ অবস্থা জানার পরামর্শও দিয়েছে তারা। পাশাপাশি যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে বাড়তি কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
ব্রাসেলস বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে হামলার পর শনিবার সকালেই অন্তত চারটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে রুয়ান্ডা ও আমস্টারডামের ফ্লাইটও রয়েছে। সফটওয়্যার অচল হয়ে পড়ায় আপাতত স্বয়ংক্রিয় চেক-ইন ও বোর্ডিং সেবা বন্ধ আছে। ফলে যাত্রীদের কেবল ম্যানুয়াল চেক-ইন ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে। এতে সময়সূচিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে এবং শেষ পর্যন্ত আরও ফ্লাইট বাতিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। বার্লিন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষও এক বিবৃতিতে বলেছে, সাইবার হামলার কারণে যাত্রীদের দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে সমস্যা দ্রুত সমাধানে কাজ চলছে বলে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে তারা।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কত সময় লাগবে, তা এখনও স্পষ্ট বুঝতে পারছে না ব্রাসেলস ও বার্লিন কর্তৃপক্ষ। সাইবার হামলার প্রভাব মোকাবিলায় সমাধান খোঁজার চেষ্টা চলছে। ব্রাসেলস বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইন্টারনেট পরিষেবা যতক্ষণ পর্যন্ত স্বাভাবিক না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে যাত্রীদের পরিষেবা প্রদান করা হবে। যদি শিগগিরই কলিন্স অ্যারোস্পেসের ত্রুটি না সারে, তাহলে প্রতিটি ফ্লাইটের ডিপার্চার সময় ৫৪ মিনিট পিছিয়ে যাবে। ইউরোপের সব বড় বিমানবন্দর অবশ্য এ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ফ্রাঙ্কফুর্ট, হ্যামবার্গ ও জুরিখ বিমানবন্দরে ফ্লাইট এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক আছে।
তথ্যসূত্র : দ্য ডেইলি মেইল, আনাদোলু এজেন্সি