ট্রাম্পের হাতেই মার্কিন আধিপত্যের পতন!

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় শনিবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২০

ডেস্ক রিপোর্ট

‘আমি বলব, বিশ্বে আমেরিকার মোড়লগিরির মৃত্যু হতে যাচ্ছে; আমরা দেখছি, বিশ্বব্যাপী মার্কিন আধিপত্য খানখান হয়ে ধসে পড়ছে।’ মধ্যপ্রাচ্য সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির সমালোচনা করে এমন মন্তব্য করেছেন সিমন জেনকিনস। ব্রিটিশ এ লেখক গতকাল দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত মতামত নিবন্ধে বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্প খামোখা গলাবাজি করছেন। এই গলাবাজি হলো মরতে বসা একটা সাম্রাজ্যের শেষ আর্তনাদ।

 

সামরিক হামলায় ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের পুরনো শত্রুতা আরও বেড়েছে। সোলেইমানিকে এমনকি দেশটির প্রেসিডেন্টের চেয়েও ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী বলে ধরা হতো। ইরানের বহিঃপ্রতিরক্ষা বাহিনী কুদসের প্রধান ছিলেন তিনি। তার হত্যার বদলা নিতে ইরানের জনতা থেকে সরকার, সামরিক বাহিনী থেকে সর্বোচ্চ নেতা-সবাই জোরকণ্ঠ হয়েছেন।

 

৩ জানুয়ারি ইরাকের রাজধানী বাগদাদের একটি বিমানবন্দরে হত্যার শিকার হন সোলেইমানি। কয়েকদফা শেষে মঙ্গলবার তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। রবি থেকে মঙ্গলবার-তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক শেষ হওয়ার পর দিনই ইরাকে মার্কিন সেনাঘাঁটিতে হামলা চালায় ইরান। ৮০ জন নিহত হয়েছে বলে প্রথমে দাবি করেছিল তেহরান, কিন্তু ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের দাবি কোনো সেনাই হতাহতের শিকার হননি। তেহরান ওই দিন হামলার ব্যাপারে বলে, সোলেইমানি হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার পালা শুরু সবে, এ হামলা ছিল তারই সূচনা।

 

মার্কিন সেনা হত্যা করতে না পারলেও ইরানের হামলার পরদিন ট্রাম্পের কণ্ঠে নরম সুর শোনা যায়। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, বিনাশর্তে ইরানের সঙ্গে সত্যিকারের আলোচনা ও সমঝোতায় তিনি রাজি আছেন।

 

এত দিন ট্রাম্প কিন্তু বারবারই বলে এসেছেন, ‘ইরান কোনোদিনই পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র হতে পারবে না। আমরা তা হতে দেব না।’ মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর তাই প্রশ্ন উঠছে, ট্রাম্পের হুঙ্কার গলাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। তলে তলে তেহরান নিজেকে পারমাণবিক শক্তি হিসেবে তৈরি করে ফেলছে। গতকাল যেমন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁÑযুব লে দ্রিয়ান বলেছেন, ইরান দুয়েক বছরের মধ্যেই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হয়ে যাবে।

 

সোলেইমানিকে হত্যার ব্যাপারে ওয়াশিংটন বলছে, তারা জাতিসংঘের ৫১ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী আত্মরক্ষার জন্যই ‘বিশ্বের শীর্ষ সন্ত্রাসী’ সোলেইমানিকে ‘খতম’ করেছে। ইরান পাল্টা হামলা চালানোর পর তারা নতুন করে অবরোধও আরোপ করেছেন তেহরানের ওপর।

 

পাশাপাশি ইরানের ৫২টি সাংস্কৃতিক স্থাপনায় হামলার হুশিয়ারিও দিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু এ ঘোষণার পর বিশ্বব্যাপী তিনি সমালোচনার মুখে পড়েন। অনেকে বলছেন, এমন হুমকি দিয়ে তিনি মূলত যুদ্ধাপরাধের শামিল কাজ করেছেন।

 

ইরান সোলেইমানি হত্যার প্রতিশোধ নেবেই। তবে সেটা কী আকারে তা বলা কঠিন। ‘সামরিক হামলার জবাব সামরিক’-এমন কথাও তেহরান থেকে শোনা গেছে। সোলেইমানির কন্যা অস্ত্র হাতে অঙ্গীকার করেছেন, ‘শয়তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলবে’। ট্রাম্পের মাথার দামও ঘোষণা করা হয়েছে ইরান থেকে। এখন ট্রাম্পকে দিন গুনতে হবে এবং রাত পোহাতে হবে হিসাব কষে। কারণ তিনি নিজেই ‘বারুদের বাক্সে ডিনামাইট ছুড়েছেন’।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
All rights reserved www.mzamin.news Copyright © 2023