ওমরাহ যাত্রার অনিশ্চয়তায় আর্থিক ক্ষতি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় রবিবার, ১ মার্চ, ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা

করোনা ভাইরাস আতঙ্কে সৌদি আরব সাময়িকভাবে সব ওমরাহ যাত্রী ও পর্যটকদের সেদেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। সারাবিশ্বের মতো এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। সম্প্রতি প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি ওমরাহ’র জন্য ভিসা করালেও তারা এখন সৌদি আরবে যেতে পারছেন না। যদিও ভিসার শর্ত অনুসারে বিমান ও হোটেলসহ অন্যান্য প্রস্তুতি বাবদ টাকা খরচ করে ফেলেছে এজেন্সিগুলো। ফলে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।

 

২৭ ফেব্রুয়ারি করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে বিদেশিদের ওমরাহ পালন স্থগিত করে সৌদি আরব। একইসঙ্গে বন্ধ করে দেয় পর্যটক ভিসা নিয়ে আসা বিদেশিদের সৌদি আরবে প্রবেশ।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে,২৭ ফেব্রুয়ারি এ ঘোষণা দেওয়ার আগেই ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ওমরাহ যাত্রীদের ফিরে আসতে হয়। সেদিন দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রায় এক হাজার ওমরাহ যাত্রী ফিরে আসেন।

 

কেবল ওমরাহ বন্ধই নয়,মদিনাতেও বিদেশিদের প্রবেশ বন্ধ করেছে সৌদি আরব। এই শহরে হজরত মুহাম্মদ (স.) এর সমাধি থাকায় সারাবিশ্বের ‍মুসলমানরা জিয়ারত করতে আসেন। এদিকে, নতুন করে ভিসা না দিলেও আগে যাদের ভিসা দিয়েছে সৌদি সরকার, তাদের নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে হজ  এজেন্সিগুলো।

 

হাব জানিয়েছে,সম্প্রতি প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি নাগরিকের ওমরাহ’র জন্য ভিসা করা হয়েছে। বিভিন্ন এজেন্সি এই ওমরাহ যাত্রীদের জন্য প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতাও সম্পন্ন করেছে।  সৌদি সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, ভিসা করার আগেই দেশটিতে থাকার জন্য হোটেলসহ বেশ কিছু আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হয়। এ কারণে অর্থ খরচ করে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক কাজও শেষ করেছে বিভিন্ন হজ এজেন্সি। ফলে সৌদি আরবে যেতে না পারায় হোটেল ভাড়া, বিমান ভাড়া, গাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য খরচবাবদ আর্থিক ক্ষতি হবে এজেন্সিগুলোর।

 

হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন,  ‘১০ হাজার ওমরাহ যাত্রীর সবার ভিসা করা হয়েছিল। ভিসার জন্য ২০ কোটির বেশি টাকা খরচ হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার যাত্রীর বিমানের টিকিটও কেনা হয়েছে। যাত্রা বাতিল করলে এয়ারলাইন্সগুলো টিকিটের টাকা ফেরত দেয় না। ভিসা করার আগে সৌদিতে থাকার হোটেলের জন্য অগ্রিম টাকা দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা লোকসানের মুখে পড়েছে এজেন্সিগুলো।’

 

তিনি বলেন, ‘সৌদি আরব কখনও ভিসা ফি’র টাকা ফেরত দেয় না।  আমাদের এখন কূটনৈতিকভাবে তৎপরতা দরকার।  হাবের পক্ষ থেকে সরকারের সঙ্গে আলাপ করা হবে, কীভাবে লোকসান থেকে বাঁচা যায়।’

 

সৌদি সরকারের এই স্থগিতাদেশের প্রভাবে শুধু হজ এজেন্সি নয়, এয়ারলাইন্সগুলোও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। বাংলাদেশ থেকে জেদ্দায় সপ্তাহে সাতটি ও মদিনায় পাঁচটি  ফ্লাইট পরিচালনা করে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ওমরাহ যাত্রীদের নিয়ে যেতে না পারলে প্রায় খালি যেতে হবে ফ্লাইটগুলো। চাইলেও ফ্লাইট বন্ধ কিংবা কমাতে পারছে না এয়ারলাইন্সটি। কারণ, ফিরতি ফ্লাইটে  আগে থেকে বুকিং করা যাত্রীদের নিয়ে আসতে হবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে।

 

এ প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোকাব্বির হোসেন বলেন,  ‘আমরা চাইলে ফ্লাইট কমিয়ে আনতে বা বন্ধ করতে পারছি না। কারণ, যারা আগেই সৌদি আরব  থেকে দেশে আসতে টিকিট কেটেছেন, তাদের তো ফিরিয়ে আনতে হবে। ফলে তাদের ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ থেকে কম যাত্রী নিয়ে হলেও ফ্লাইট চালিয়ে যেতে হবে। এতে আমাদের আর্থিক ক্ষতি হবে। কিন্তু এর বিকল্প কিছুই করার নেই।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
All rights reserved www.mzamin.news Copyright © 2023